একমাত্র ঈশ্বরের সেবা ও পূজা

তৃতীয় শ্রেণি (প্রাথমিক স্তর ২০২৪) - খ্রিষ্টধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা - ঈশ্বরের দশ আজ্ঞা | | NCTB BOOK

পাঠ: ৪

একমাত্র ঈশ্বরের সেবা ও পূজা করা

 

 

সদা প্রভু ঈশ্বর মোশীর কাছে দশটি আজ্ঞা দিয়েছেন। আজ্ঞাগুলো হলো ঐশবিধান। সমাজে বা পরিবারে বাস করতে গেলে আমাদের বেশ কিছু নিয়মনীতি মেনে চলতে হয়। ঠিক একইভাবে আমাদের বিশ্বাস ও বাস্তব জীবনের জন্য ঐশী বিধানগুলোর প্রয়োগ দরকার।

"তুমি আপন প্রভু ঈশ্বরকে পূজা করবে ও কেবল তাঁরই সেবা করবে।"

সুমন প্রতিদিন সন্ধ্যায় খুব ভক্তিসহকারে মা বাবা ও পরিবারে সবার সাথে একত্রে প্রার্থনা করে। প্রার্থনার সময় কোন ধরনের দুষ্টুমী করে না বা অমনোযোগী হয় না। প্রার্থনায় সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে। নিয়মিত বাইবেল পাঠ মনোযোগ দিয়ে শোনে। বাইবেলের শিক্ষা অনুসারে জীবন যাপন করে। সুমন জানে ও বোঝে ঈশ্বরের প্রতি শ্রদ্ধা ও তাঁর সেবা করাই আমাদের সবার দায়িত্ব ও কর্তব্য। সে কোনো মন্দ পথে চলে না ও মন্দ কাজ করে না। সর্বদা সে গুরুজনের আদেশ-নির্দেশ পালন করে ঈশ্বরের পথে চলতে চায়। তার এ ধরনের জীবন যাপন দেখে পরিবারের সবাই খুশি। এমনকি তার বন্ধু ও সহপাঠীরা, শিক্ষক ও পাড়া-প্রতিবেশীরাও খুবই খুশি। তাকে দেখে অন্যেরাও ঈশ্বরকে ভালোবাসতে ও সেবা করতে চেষ্টা করে।

 

"প্রতিমা পূজা করবে না।" (প্রোটেস্ট্যান্ট বিশ্বাস অনুযায়ী)

 

সীমার পরিবার খুবই ধার্মিক। প্রতিদিন প্রার্থনা করে ও পবিত্র বাইবেল পাঠ করে। পবিত্র বাইবেলের বাণী সহভাগিতা করে। এইভাবে খুব শান্তিতে তাদের দিন চলছিল। গত কয়েক দিন ধরে তার ভাই রবিন নানা অজুহাতে প্রার্থনায় অনুপস্থিত থাকে। সীমার মা বেশ চিন্তিত হন। হঠাৎ সীমা একদিন দেখতে পায় তার ভাই রবিন একটি সাপের মূর্তি এনে ঘরে রাখলো। সীমা অবাক হলো। রবিনকে নানা প্রশ্ন করলো। সে উত্তর না দিয়ে চুপ করে রইলো। সীমা চুপি চুপি দেখতে পেলো রবিন সাপের মূর্তিটাকে পূজা করছে। সীমা দৌড়ে রবিনকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগলো। সে বললো, দাদা! তুমি কী করছো?" আমরা তো সবাই জানি একমাত্র ঈশ্বর ছাড়া কোন প্রতিমাকে পূজা করবো না। সীমা আরও কাঁদতে কাঁদতে বললো, - রবিন যেন আর কোনদিন এ ধরনের মূর্তি পূজা না করে। সীমার কান্না দেখে রবিন বেশ কষ্ট পেলো। - দুঃখিত হয়ে সে সীমার কাছে ক্ষমা চাইলো। সীমা রবিনকে জড়িয়ে ধরে অনুরোধ করলো। সে সীমাকে কথা দিলো আর কোনদিন এ ধরনের কাজ করবে না।

 

"ঈশ্বরের নাম অনর্থক নিবে না"

 

শুভ্র খুব বুদ্ধিমান ছেলে কিন্তু খুবই দরিদ্র। তবে সে খুব ভদ্র। কাউকে কখনও তিরস্কার করে না। দরিদ্র হলেও সবসময় ঈশ্বরকে স্মরণ করে এবং সবকিছুর জন্য ধন্যবাদ জানায়। কোনভাবেই বা কোন কারণেই শুধু শুধু ঈশ্বরের নাম উচ্চারণ করে না বা অযথা তার বিরুদ্ধে কোন কথাও বলে না। একদিন তার বন্ধু সমীর তাকে পরীক্ষা করার জন্য বললো, তুই তো অনেক ভালো ছেলে তুই দিনে কতবার ঈশ্বরের নাম মুখে উচ্চারণ করতে পারবি? শুভ্র সমীরের চালাকি বুঝতে পেরে, খুব সরল মনে সুন্দর ও সাবলীল ভাষায় বললো আমার প্রয়োজন অনুযায়ী শ্রদ্ধাভরে তা স্মরণ করি। অযথা আমি তা করি না। শুভ্রর কথা শুনে সমীর একটু লজ্জিত হয়ে বললো, আমি খুবই দুঃখিত তোকে এভাবে পরীক্ষা করার জন্য। আমার ভুলের জন্য আমি ক্ষমা চাই। আজ থেকে আমিও ঈশ্বরের নাম অনর্থক নেবো না।

ক) চিন্তা করে লিখি

i) সুমন প্রতিদিন কী করে? 

ii) রবিন কিসের মূর্তি এনে ঘরে রাখলো?

iii) সীমার কান্না দেখে কে কষ্ট পেলো?

iv) আমরা কার পূজা করবো না?

v) অযথা কার নাম নেয়া যাবে না?

 

খ) বাম পাশের সাথে ডান পাশের মিল করি

গ) প্রথম আজ্ঞার গল্পের মত একটি গল্প বলি। 

এ পাঠে শিখলাম

 

- এক ঈশ্বরের সেবা ও পূজা করবো, প্রতিমা পূজা করবো না এবং ঈশ্বরের নাম অনর্থক নিবো না।

Content added By
Promotion